উচ্চমাধ্যমিক সংস্কৃত সাজেশন।। কর্মযোগ।। বড় প্রশ্ন।। Higher secondary suggestions
কর্মযোগ
১) পাঠ্যাংশ অনুসরণে গীতার কর্মযোগের তত্ত্বটি সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করো।
উত্তরঃ- গীতা শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী। এখানে পাঠ্যাংশের অন্তর্গত শ্লোকগুলিতে কর্মযোগের কথা বলা হয়েছে। তার সারাংশ হল—
কর্মফল মানুষকে সংসারে আবদ্ধ করে। কর্ম করলেই তার ফলভোগের জন্য সংসারে জন্মগ্রহণ করতে হয়। তাই কর্ম বর্জনই হল মুক্তির পথ। এই দর্শনই ভ্রান্ত দর্শন। কোনো কর্ম না করলেই যে, মানুষ নিষ্কর্মভাব উপভোগ করে তা নয়। আবার, শুধু কর্মত্যাগের দ্বারা সিদ্ধিলাভও করা যায় না। কারণ, কর্ম ত্যাগ সম্ভবই নয়। বাহ্যিক কর্ম না করলেও সত্ত্ব-রজ-তম এই তিনটি গুণের দ্বারা প্রতিটি মানুষ বাধ্য হয়ে কর্ম করে।
জগতে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যিনি কর্মেন্দ্রিয়গুলিকে সংযত করে মনে মনে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়গুলিকে স্মরণ করতে থাকেন। সেই মৃঢ়চেতা ব্যক্তিকে মিথ্যাচারী বলা হয়। তাই ইন্দ্রিয়গুলিকে মনের দ্বারা সংযত করে নিরাসক্ত হয়ে যিনি কর্মযোগ অনুষ্ঠান করেন তিনি শ্রেষ্ঠ। বস্তুত কর্ম না করলে শরীরযাত্রাও চলবে না। জনক প্রভৃতি রাজারাও কর্মের দ্বারাই পূর্ণ সিদ্ধি লাভ করেছিলেন।
শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যা যা আচরণ করেন অন্য সাধারণ ব্যক্তি সেগুলিই আচরণ করেন। তিনি যে আদর্শ সৃষ্টি করেন লোকে সেটি অনুসরণ করে। তাই কর্মবর্জনের আদর্শ কখনও প্রতিষ্ঠা করা উচিত নয়। আর, যে মানুষেরা শ্রদ্ধাবান দ্বেষবুদ্ধিবর্জিত হয়ে সব সময় কর্ম করেন তাঁরাও কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হন। আর একটি তত্ত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হল স্বধর্ম অনেক দোষে দুষ্ট হলেও তা সুচারুরূপে অনুষ্ঠিত পরধর্ম থেকে শ্রেয়। স্বধর্মে মৃত্যুও শ্রেয়, তবু পরধর্মের অনুসরণ বিপজ্জনক।
২) কেন কর্মত্যাগের দ্বারা নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি হয় না তা নিজের ভাষায় বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ- শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা শ্রীকৃয়ের মুখনিঃসৃত বাণী। এই গ্রন্থের কর্মযোগের শুরুতেই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন কর্মত্যাগের দ্বারা নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি লাভ করা যায় না। সাংখ্য দার্শনিকগণ মনে করতেন, মানুষ তার কর্মের দ্বারাই বন্ধ হয়। তাই সম্পূর্ণভাবে কর্মত্যাগ বা কর্মসন্ন্যাসের দ্বারাই নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি লাভ করা যায়। এটিই মুক্তির পথ। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ বলেন, না তা কখনই সম্ভব নয়। কর্মসন্ন্যাসের দ্বারা কখনই নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি পাওয়া যায় না। কারণ, কর্মত্যাগ বলে যা বলা হয় তা হল কর্মেন্দ্রিয়গুলির কর্মত্যাগ। বস্তুতপক্ষে কর্মেন্দ্রিয়ের কর্ম ত্যাগ করা সম্ভব হলেও অন্তরিজিয় মনের কিছু বন্ধ করা কখনোই সম্ভব নয়। মানুষ এক ক্ষণও সেই মানসিক না করে থাকতে পারে না। তাহলে মানসিক কর্ম চলতে থাকছে তাকে কর্মত্যাগ বলা যায় না। বাহ্যিক কর্ম বন্ধ করে যাদ কোনে ব্যক্তি বাহা ইন্জিয়ের উপভোগ্য বিষয়গুলির কথা চিন্তা করে, গী সেই ব্যক্তিকে 'মিথ্যাচারঃ' অর্থাৎ ব্যর্থাচারী বলেছে। তাই ত্যাগ বা সন্ন্যাস হল অন্তরের সন্ন্যাস। আসত্তি ত্যাগ করতে হবে, ফলের কামনা ত্যাগ করতে হবে। তাহলেই সিদ্ধিলাভ সম্ভা গীতা অষ্টাদশ অধ্যায়ে এই কথাই স্পষ্টভাবে বলেছে
অসক্তবুদ্ধিঃ সর্বত্র জিতাত্মা বিগতস্পৃহঃ।
নৈষ্কর্য্যসিদ্ধিঃ পরমাং সন্ন্যাসেনধিগচ্ছতি।। (গীতা ১৮/৪৯)
৩) 'মিথ্যাচার' কাকে বলা হয় গীতার কর্মযোগ ব্যাখ্যা করে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ- শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার তৃতীয় অধ্যায়ের নাম কর্মযোগ। এখানে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর কর্মযোগ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘মিথ্যাচার’-এর লক্ষণ দিয়েছেন।
মিথ্যাচার শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল—যাঁর আচরণ মিথ্যা বা নিষ্ফল তিনি হলেন মিথ্যাচার অর্থাৎ ব্যর্থাচারী। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন—
“কর্মেন্দ্রিয়াণি সংযম্য য আস্তে মনসা স্মরন্।
ইন্দ্ৰিয়ার্থান্ বিমূঢ়াত্মা মিথ্যাচারঃ স উচ্যতে।।”
অর্থাৎ যিনি কর্মেন্দ্রিয়কে সংযত করে মনে মনে ইন্দ্রিয়ের। উপভোগ্য বিষয়গুলি স্মরণ করেন তিনি মিথ্যাচার।
সাংখ্য দার্শনিকগণ জ্ঞানকেই একমাত্র মুক্তির পথ বলে নির্দেশ করেছেন। তাঁরা বলেন—–কর্ম বন্ধনের কারণ। তাই, সব রকম কর্মত্যাগ করলে তবেই মুক্তি লাভ করা যায়। শ্রীকৃ বলেছেন–কর্ম না করে কেউ এক মুহূর্তও থাকতে পারে না। আর, কর্মেন্দ্রিয়গুলির কর্ম বন্ধ করলেই কর্ম বন্ধ হয় না। মনের মধ্যে কর্ম চলতেই থাকে। তাই কর্মেন্দ্রিয়ের কর্ম বন্ধ করেও কর্মসন্ন্যাস করা যায় না। তাই, ভিতরের কর্মকে চলতে দিয়ে বাইরে হাত-পাকে নিশ্চল করে রেখে কোনো লাভ হয় না। তিনি বলেছেন যে, যিনি এই রকম কর্মেন্দ্রিয়ের কর্মকে বন্ধ রেখে মনে। মনে ইন্দ্রিয়ের উপভোগ্য বিষয়গুলিকে স্মরণ করতে থাকেন তিনি ‘মিথ্যাচার’ অর্থাৎ তাঁর আচরণ মিথ্যা বা বিফল। অর্থাৎ কর্মেন্দ্রিয়ের কর্মকে পরিত্যাগ করে কোনো ফল লাভ করা যায় না। যাঁরা এই চেষ্টা করেন, তাঁরা মিথ্যাচার অর্থাৎ ব্যর্থাচারী। সহজ কথায় বাহ্যকর্ম ত্যাগীরা ব্যর্থাচারী।৪) "तस्मादसक्तः सततं कार्य कर्म समाचर' উক্তির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ- শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার তৃতীয় অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্মযোগ = ব্যাখ্যা করেছেন। সর্বদা কামনা-বাসনা ত্যাগ করে কর্ম শ করতে হবে— আলোচ্য শ্লোকাংশে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে এই উপদেশ দিয়েছেন।
সাংখ্য দার্শনিকগণ মুক্তির জন্য কর্মসন্ন্যাস অবলম্বনের কথা বলেছেন। যেহেতু কর্ম জীবের বন্ধনের কারণ হয়, তাই তাকে ত্যাগ করাই হল মুক্তির পথ। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের মতে তা কখনও গ্রহণীয় হতে পারে না। তিনি বলেছেন এভাবে কর্মসন্ন্যাস সম্ভবই নয়। কারণ, কর্মেন্দ্রিয়ের কর্মকে পরিত্যাগ করে কখনও কর্মসন্ন্যাস হয় না। কর্মেন্দ্রিয়ের কর্ম বন্ধ হলেও মনের কর্ম চলতে থাকে। তাই কর্মেন্দ্রিয়ের কর্মকে জোর করে পরিত্যাগ করে কোনো লাভ নেই। কামনা বাসনা ত্যাগ করে আসক্তিশূন্য হয়ে সবরকম সৎ কর্ম করা উচিত। কর্ম কখনই পরিত্যাগ করা উচিত নয়। ভাগবত প্রেরণায় জগতের হিতের জন্য যে-কোনো কর্মই করতে হোক না কেন তা নিষ্কামভাবে করতে হবে। আত্মনিষ্ঠ আত্মতৃপ্ত জ্ঞানীরা সবসময় অনাসক্ত হয়ে কর্ম করেন। এই নিষ্কাম কর্মই চরম মুক্তির পথ। তাই, শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ, অর্জুনও যেন অনাসক্ত হয়ে নিজের কর্তব্য কর্ম করেন। কর্মসন্ন্যাসের মাধ্যমে নয়, বরং নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমেই মানুষ সেই পরমপুরুষকে লাভ করতে পারে।
৫) "यद् यदाचरति श्रेष्ठस्तत्तदेवेतरो जनः' উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।Click here
৬) स्वधर्मे निधनं श्रेयः परथर्मो भयावह: "তাৎপর্য বর্ণনা করো।
৭) পাঠ্যাংশে কাকে মিথ্যাচারী বলা হয়েছে। তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ কে?
৮) প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক শ্লোকটি ব্যাখ্যা করো :
नहि कश्चित् क्षणमपि जातु तिष्ठत्यकर्मकृत् ।