কোনো বিষয়কে সাজিয়ে বর্ণনা করার নামই রচনা। যে বিষয়ে লিখতে হবে, সে বিষয় ভালোভাবে চিন্তা করে নিতে হবে। যে যে বিষয় বলতে হবে, তার মধ্যে আগে ঠিক বলতে হবে এবং পরে কি বলতে হবে তা নিজের মানের সবার আগে ঠিক করে নিতে হবে। কোনো বিষয় থাকে একবারের বেশি বলা না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখা উচিত।
ধরো, গোলুর বিষয় লিখছি। প্রথমে বললাম- গোৰু চতুষ্পদ জন্তু। এই কথা বলার পর আবার যদি বলি- তার চারটি পা আছে, তবে আগে বলা কথাটাই আবার, বলা হল না কি? সুতরাং এ বিষয় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রবন্ধ বা রচনা লেখার আগে মনে রাখা উচিত
(খ) উদ্ভিদ বিষয়ক
(গ) স্থান বিষয়ক
(ঘ) জীবনচরিত বিষয়ক
(ঙ) বস্তু বিষয়ক
(চ) ঋতু বিষয়ক
(ছ) চিন্তা বিষয়ক
প্রাণীবিষয়ক রচনা লিখেতে হলে বক্তব্য বিষয় এইভাবে ভাগ করে নিতে হয় ।
(৫) আয়ুষ্কাল
(৬) খাদ্য
(৭) উপকারিতা ও অপকারিতা
জন্ম-পরিচয় : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়ের নাম ভগবতী দেবী।
শিক্ষা ও কর্ম : গ্রামের পাঠশালার পড়া শেষ হলে তিনি কলকাতার সংস্কৃত কলেজে ভরতি হন। মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি 'বিদ্যাসাগর' উপাধি পান। পরে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। তিনি স্কুল পরিদর্শকের কাজও করেন।
তিনি অনেকগুলি স্কুল ও কলেজ স্থাপন করেন। তিনি অনেক বই লেখেন। তিনি সমাজের অনেক কুসংস্কার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন এবং বিধবা বিবাহ প্রচলন করেন। সমাজের কল্যাণে বিদ্যাসাগর সারা জীবন কাজ করে গেছেন।
চরিত্র : তিনি শুধু বিদ্যাসাগর নন, 'দয়ার সাগর'ও ছিলেন। পরের দুঃখ দেখলে তিনি ভীষণ কাতর হতেন এবং সে দুঃখ দূর করার জন্য ব্যাকুল হতেন। তিনি মাতাপিতাকে অত্যন্ত ভক্তি করতেন। এরূপ মহাপুরুষ আমাদের সকলের শ্রাদ্ধার পাত্র। এই মহামানবের মৃত্যু ঘটে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই।
🌷রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর🌷
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বের একজন শ্রেষ্ঠ কবি—তাই তাঁকে বিশ্বকবি বলা হয়। ইনি ১২৬৮ বঙ্গাব্দের (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে) ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্র ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ অল্প বয়স থেকেই কবিতা লিখতেন।
রবীন্দ্রনাথ বড়ো হয়ে অনেক কবিতা, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ, উপন্যাস লেখেন। তিনি 'গীতাঞ্জলি' লিখে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার 'নোবেল পুরস্কার' পান। তাঁর নাম তখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
রবীন্দ্রনাথ সুন্দর গান করতেন ও ছবি আঁকতেন। তিনি বোলপুরের কাছে শান্তিনিকেতনে একটি আদর্শ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। আজ তা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। ইনি ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের (১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ) ২২ শ্রাবণ পরলোকগমন করেন।
🌹স্বামী বিবেকানন্দ🌹
১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম বিশ্বনাথ দত্ত ও মায়ের বাল্যকালে স্বামী বিবেকানন্দের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ ও ডাক নাম ছিল 'বিলে'। ছোটোবেলা থেকেই নাম ভুবনেশ্বরী দেবী।
তিনি পরোপকারী ছিলেন। লেখাপড়ায় তিনি ভালো ছিলেন। তিনি দক্ষিণেশ্বরের মহাপুরুষ রামকৃষ্ণ রহমংসদেবের সান্নিধ্যে আসেন। তিনি তাঁর কাছে দীক্ষা নিয়ে সন্ন্যাসী হন।
রামকৃষ্ণদেবের তিরোধানের পর নরেন্দ্রনাথ স্বামী বিবেকানন্দ হন এবং সারা ভারতে গুরুর আদর্শ প্রচার করেন। তিনি আমেরিকার চিকাগোতে বিশ্বের ধর্ম মহাসম্মেলনে যোগ যোগ ও ধর্মকথা শোনান। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ইনি পরলোকগমন করেন।
🌻সুভাষচন্দ্র বসু🌻
জন্ম-পরিচয় : সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জানকীনাথ বসু ছিলেন বিখ্যাত উকিল।
শিক্ষা ও কর্ম : তিনি প্রথমে কটকের মিশনারী স্কুলে, তারপর কলকাতায় প্রেসিডেন্সী কলেজ ও স্কটিস চার্চ কলেজে লেখাপড়া শেখেন। পরে তিনি বিলাত থেকে আই. সি. এস. পরীক্ষা পাস করেন। কিন্তু তিনি চাকরি গ্রহণ না করে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সঙ্গে মিলে দেশের কাজে যোগ দেন। এজন্য তাঁকে বারবার জেলে যেতে হয়। তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হন। তারপর ইংরেজের পুলিশরা তাঁকে বাড়ির মধ্যেই বন্দিল করে রাখে। বন্দি অবস্থাতেই তিনি লুকিয়ে জার্মান যান।
সুভাষচন্দ্র জাপানে আজাদ হিন্দ ফৌজ নামে একটি ভারতীয় সৈন্যদলে নেতৃত্ব দেন ও ইংরেজদের বিরুদ্ধ যুদ্ধ করেন। তখন থেকে তাকে বলা হয় নেতাজি। ইংরেজ সৈনাদের পরাজিত করে তিনি ভারতের অল্পকিছু জায়গা দখলও করেন। তারপর নানা কারণে আজাদ হিন্দ ফৌজের পতন ঘটে।
উপসংহার : এরপর হঠাৎ একদিন তিনি লুকিয়ে কোথায় চলে যান। তারপর তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শোনা যায় তিনি নাকি এরোপ্লেন দুর্ঘটনায় মারা যান। কিন্তু দেশবাসীগণ এই কথা বিশ্বাস করে না।